Diarrhoea Health And Medicine Trips Bangla (উদরাময় রোগের বিবরণ আক্রান্ত তন্ত্র রোগের কারণ রোগ লক্ষণ চিকিৎসা আনুষঙ্গিক চিকিৎসা )
রোগের বিবরণ
উদরাময় দু ধরনের হয। একপ্রকার হল অ্যাকিউট ডায়েরিয়া যা সাধারণতঃ বিভিন্ন ধরনের জীবাণু দুষণ থেকে হতে পারে। আর এক ধরণ হলো ক্রনিক ডায়েরিয়া যাতে একটানা মৃদু প্রকৃতির রোগ চলতে থাকে। উদরাময় বলতে পাতলা মল নিঃসরণ বোঝায়।
আক্রান্ত তন্ত্র
র্পৌষ্টিক তন্ত্র এবং বিপাকতন্ত্র এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়।
আক্রমণের বয়স অ্যাকিউট ডায়েরিয়া সব বয়সে হতে পারে। ক্রনিক ডায়েরিয়াও সব বয়সে হতে পারে। তবে শিশুদের ও বৃদ্ধদের বেশি হতে দেখা যায়।
আক্রান্ত লিঙ্গ স্ত্রী ও পুরুষ উভয়ের এই রোগ হয়। ক্রনিক ডায়েরিয়া মহিলাদের একটু বেশি হতে দেখা যায়।
রোগের কারণ
১ অ্যাকিউট ডায়েরিয়ার কারণ হল ঈ কোলি স্যালমোনেল্লা সিগেল্লা ক্যাসপাইলোব্যাকটার জেজুনি ভিব্রিও প্যারাহেমোলাইটিকাস জারসিনিয়া এন্টারোকোলাইটিকা প্রভৃতি ব্যাকটেরিয়া রোটাভাইরাস নরওয়াক ভাইরাস জিয়ার্ডিয়া ল্যাম্বলিয়া ক্রিপটোস্পোরিডিয়াম এন্টামিবা হিস্টোলাইটিকা প্রভৃতির আক্রমণে এই রোগ হয়। সাধারণতঃ পচা বা বাসি খাদ্য গ্ৰহণ অশোধিত পানীয় জল আমিষ জাতীয় খাদ্য বেশি খাওয়া প্রভৃতির মাধ্যমে রোগ সংক্রমণ ঘটে।
২ ক্রনিক ডায়েরিয়ার কারণ হল
কষ্ঠি কাঠিন্য ভোগা থেকে পেটে জীবাণু সংক্রমণ হয়ে কয়েকদিন পর পর উদরাময়ের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া। ক্ষুদ্রন্ত্র ও বৃহদান্ত্রে পাচিত খাদ্যবস্তু ও তার জলীয় অংশ ঠিকমত শোষিত না হওয়া। কোন ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জনিত কারণে বৃহদান্ত্রের ক্ষত প্রভৃতি থেকে ক্রনিক ডায়েরিয়ার সৃষ্টি হয়।
রোগ লক্ষণ
১ পাতলা জলের মত মল নিঃসরণ তাতে রক্ত বা মিউকাস থাকতে পারে বা নাও থাকতে পারে। দিনে ৮ থেকে ১০ বারের ও বেশি পায়খানা হতে পারে।
২ পেটে ব্যাথা যন্ত্রণা কামড়ানি বা খোঁচানি ভাব থাকে।
৩ পেটে ভুটভাট করে আর পায়খানা হয়।পেটে ফাঁপা ভাব লক্ষ্য করা যায়।
৪ গা বমি ভাব থাকতে পারে। এমনকি দু'একবার বমিও হতে পারে।
৫ মাথার যন্ত্রণা ও জ্বর ভাব হতে দেখা যায়। শীতবোধ হয়।
৬ টক ঢেকুর গলা ও বুক জ্বালা প্রভৃতি থাকে।
৭ মলে এবং বমি হলে তার সাথে হজম না হওয়ার খাদ্যোর টুকরো আসতে পারে।
৮ পায়খানা হওয়ার পর শরীর দুর্বল হয়ে যায়। মাথা ঘুরে।
৯ জল শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হয়ে যেতে পারে।
চিকিৎসা
1 নিচের যেকোনো একটি জীবাণু নাশক ঔষধ দিতে হবে।
Tab Anquin 400 mg (ট্যাবলেট অ্যানক্যুইন ৪০০মিগ্ৰা)
১ টি করে দিনে ২ বার ৫ দিন দিতে হবে।
অথবা Tab Norbactin 400 mg ( ট্যাবলেট নরব্যাকটিন ৪০০ মিগ্ৰা)
১ টি করে দিনে ২ বার ৫ দিন দিতে হবে।
2 এর সাথে নিচে যে কোন একটি অ্যান্টিডায়ারিয়াল ঔষধ দিতে হবে।
Tab Metrogyl - F (ট্যাবলেট মেট্রোজিল- এফ)
১ টি করে দিনে ৩ বার খাবার পর খেতে হবে।
অথবা Tab Lomofen (ট্যাবলেট লোমোফেন)
১-২ টি করে দিনে ৩-৪ বার অবশ্যই খাবার পর খেতে হবে।3 প্রত্যেকটির ক্ষেত্রেই প্রস্রাব হলুদ হবে। ভয়ের কোন কারণ নেই। জল বেশি করে খেতে হবে।
4 পেটে যন্ত্রণা খুব অসহ্য হলে দিতে হবে।
Tab Cyclopam(ট্যাবলেট সাইক্লোপ্যাম)
১ টি করে দিনে ২-৩ বার প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার পর দিতে হবে।
5 বমি ভাব বা বমি হতে থাকলে দিতে হবে।
Tab Perinorm-10 mg (ট্যাবলেট পেরিনর্ম)
১ টি করে দিনে ৩ বার খাবার আগে খেতে হবে।
6 ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ দেখা দিলে অর্থাৎ খুব জল পিপাসা প্রস্রাব কম হওয়া হাত-পায়ে খিল ধরা প্রভৃতি হতে থাকলে নিচে যে কোন ORS অর্থাৎ ওর্যাল রিটাইড্রেশন সল্ট গরম জল ঠান্ডা করে তাতে মিশিয়ে খেতে হবে। অবশ্য বমি না হলে বা বমি বন্ধ হওয়ার পর তবেই এই জল দিতে হবে। এই জল অল্প অল্প করে বারংবার খেতে হবে। একসাথে অনেক জল খেলেই বমি হতে পারে।
১ Electral (ইলেকট্রাল) Walyte (ওয়ালাইট)
7 য়েকোনো একটি ঔষধ বেশ কিছুদিন চালাতে হবে এই ঔষধ ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া জনিত উদরাময় ও সারে।
Cap Vizylac (ক্যাপসুল ভিজিল্যাক)
১ টি করে দিনে ৩ বার খাবার পর খেতে হবে ১০-১২ দিন
8 নিচের যেকোনো একটি হজমিকারক ঔষধ কিছুদিন খেতে দিতে হবে।
Carmozyme Liquid ( কারমোজাইম লিক্যুইড)
২ চামচ করে দিনে ২ বার দুপুর ও রাত্রে খাবার পর খেতে হবে।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা
আক্রমণের অবস্থায় রোগীকে ডাবের জল গ্লুকোজের জল প্রভৃতি খাওয়ানো ভালো। একটু সুস্থ হলে সুসিদ্ধ ভাত কাঁচা কলার ঝোল কচি মাছের ঝোল কাঁচা পোস্ত বাটা প্রভৃতি খেতে দেওয়া ভালো। মশলাদার খাবার খাওয়া চলবে না। শাক-সবজি ফলমূল কম খেতে হবে। দই সন্দেশ প্রভৃতি অল্প অল্প খাওয়া চলবে।
এই আর্টিকাল পড়ে কোন রকমের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে যোগ্য ডাক্তারবাবুর সাথে অবশ্যই পরামর্শ নেয়া উচিত।
