Typhus Fever Health And Medicine Trips Bangla (সন্নিপতি জ্বর বা টাইফাস ফিভার রোগের বিবরণ আক্রান্ত তন্ত্র সমূহ রোগ আক্রমণের বয়স আক্রান্ত লিঙ্গ রোগের কারণ রোগের জীবাণু রোগ সংক্রামণের সময় রোগ লক্ষণ রোগ নির্ণয় চিকিৎসা আনুষঙ্গিক চিকিৎসা )
রোগের বিবরণ
তিন ধরনের রিকিটসিয়ী স্পেসিজের আক্রমণের এই রোগ হয়। একটানা মারাত্মক জ্বর- এমন কি রোগীর মৃত্যুও ঘটতে পারে এই রোগ থেকে।
আক্রান্ত তন্ত্র সমূহ
কস্কালতন্ত্র ফুসফুস চর্ম অন্তঃক্ষরণ গ্ৰন্থি রক্ত ও লসিকা তন্ত্র ও রোগ প্রতিরোধ তন্ত্র এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয।
রোগ আক্রমণের বয়স
কোন নির্দিষ্ট সীমা নেই সব বয়সেই হতে পারে।
আক্রান্ত লিঙ্গ
স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েরই এই রোগ হতে পারে।
রোগের কারণ
বিভিন্ন জন্তু জানোয়ারের গায়ের পোকা বা এঁটুলি মানুষের গায়ের উকুন প্রভৃতির মাধ্যমে এই রোগের জীবাণু ছড়ায়। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এই রোগ সৃষ্টির প্রধান কারণ। এপিডেমিক টাইফাস সচরাচর মানুষের গায়ের উকুন দ্বারা সংক্রমিত হয়। এনডেমিক টাইফাস ইঁদুরের গায়ের পোকা বা সংক্রামিত হয় এবং স্ত্রাব টাইফস Chigger দ্বারা সংক্রমণিত হয়।
রোগের জীবাণু
এপিডেমিক টাইফাস হয় Rickettsia Prowazekii (রিকিটসিয়া প্রোওয়াজকীয়ী) দ্বারা এনডেমিক টাইফাস হয় Rickettsia typhi (রিকিটসিয়া টাইফি) এবং স্ত্রাব টাইফাস হয় Rickettsia tsutsugamushi (রিকিটসিয়া সত্তসত্তগামুসি) নামক জীবাণু দ্বারা।
রোগ সংক্রামণের সময়
শরীরে রোগ জীবাণু প্রবেশের ১ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে রোগ লক্ষণ প্রকাশ পায।
রোগ লক্ষণ
সাধারণত লক্ষণ যা সব ক্ষেত্রেই থাকে।
১ হঠাৎ খুব শীত ও কাঁপুনিসহ জ্বর আসা। প্রথমে ১০১° থেকে ১০৩° ফাঃ পরে ১০৬° পর্যন্ত জ্বর হতে পারে।
২ প্রচন্ডভাবে মাথা যন্ত্রণা হতে পারে।
৩ শরীরের সর্বদা একটি অস্বস্তি বোধ হতে থাকে।
৪ সর্বাঙ্গের বেশিতে প্রচন্ড ব্যথা হয়।
৫ জিহ্বাতে ময়লা কোষ্ঠ কাঠিন্য গায়ে দুর্গন্ধ প্রভৃতি হতে দেখা যায়।
এপিডোমিক পাইবাস
১ চামড়ার উপরে গোলাকার শক্ত এবং খানিকটা উঁচু এবং দাগ বিশিষ্ট উদ্ভিদ বের হয়। এটি সাধারণতঃ মধ্যদেহতেই হয়। এই উদ্ভিদ রোগাক্রমণের ৫ম দিনে থেকে হয়।
২ শুকনো কাশি হতে শুরু করে।
৩ রোগ জীবাণু ফুসফুসকে আক্রমণ করে।ব্রঙ্কাইটিসের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
এনডেমিক টাইফাস
১ মধ্যদেহে উদ্ভিদগুলি রোগাক্রমণের তৃতীয় দিনেই বের হয়।
২ মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়। মেনিনজাইটিসের লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
৩ গায়ে ইঁদুরের গায়ের ন্যায় দুর্গন্ধ বের হয়।
স্ত্রাব টাইফাস
১ কীট দংশিত স্থানে মামড়ি পড়ে।
২ সংশ্লিষ্ট স্থানে লসিকাগ্ৰন্থি ফোলে এবং প্রদাহিত হয়।
৩ শরীরের অন্যান্য স্থানের গ্রন্থিতে ফোলা বা ব্যাথা লক্ষ্য করা যায়।
৪ মধ্যদেহের উদ্ভিদের ৫ ম দিনে হতে বের হতে শুরু করে।
৫ প্লীহা বৃদ্ধি পায়।
৬ চক্ষুতে যন্ত্রণা হয়।
চিকিৎসা
নিচের যেকোনো একটি জীবাণু নাশক ঔষধ ব্যবহার করতে হবে
Cap Lenteclin 100 mg ( ক্যাপসুল লেনটেকলিক ১০০মিগ্ৰা)
১টি করে দিনে ১ বার ৭-১০ দিন দিতে হবে।
অথবা Cap Paraxin 250 mg (ক্যাপসুল প্যারাক্সিন ২৫০ মিগ্ৰা)
১টি করে দিনে ৩-৪ বার ৫ দিন দিতে হবে।
*নিচে যেকোনো একটি স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ দিতে হবে।
Tab Betnelan-0.5 mg (ট্যাবলেট বেটানিল্যান ০.৫মিগ্ৰা)
১টি করে দিনে ৩ বার ৫-৭ দিন দিতে হবে।
**নিচের যেকোনো একটি ভিটামিন সমৃদ্ধ ঔষধ দিতে হবে।
Vipro- FE Syrup (ভাইপ্রো-এফ-ই সিরাপ)
৩ চামচ করে দিনে ২বার খাবার পর খেতে হবে ১ মাস।
অথবা Bioprot Liquid (বায়োপ্রট লিক্যুইড)
৩ চামচ করে দিনে ২ বার খাবার পর খেতে হবে ১ মাস।
আনুষঙ্গিক চিকিৎসা
১ রোগীকে অবশ্যই আলো বাতাস পূর্ণ ঘরে রাখতে হবে।
২ জ্বর অবস্থায় গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে স্পঞ্জ করা ভালো এতে জ্বর কমে।
৩ জ্বর অবস্থায় এবং আক্রমণের প্রথম অবস্থায় রোগীকে প্রচুর পরিমাণে তরল খাদ্য খেতে দিতে হবে। গ্লুকোজের জল ডাবের জল মিছরির জল সরবৎ সাগু বালিক ফলে রস প্রভৃতি খেতে দেওয়া ভালো।
৪ জ্বরের প্রকোপ কমে গেলে সুসিদ্ধ ভাত মাছের ঝোল ডিমের সিদ্ধ দুধ হরলিক্স বা কমপ্লান প্রভৃতি খেতে দেওয়া ভালো।
৫ রোগীকে বেশ কিছুদিন বিশ্রামে রাখতে হবে। দিনে ৩ থেকে ৪ বার মুখ ধোবার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬ রোগীকে সুস্থ মানুষের থেকে পৃথকভাবে রাখতে হবে এবং তার ঘর সর্বদা পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
এই আর্টিকাল পড়ে কোন রকমের সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে যোগ্য ডাক্তারবাবুর সাথে অবশ্যই পরামর্শ নেয়া উচিত।
